
বাস শ্রমিককে মারধরের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে বরিশালের নথুল্লাবাদ ও রূপাতলী বাস টার্মিনাল ও আশেপাশের সড়ক অবরোধ করে বাস মালিক ও শ্রমিকেরা। এতে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বরিশাল থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একই দাবিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকাগামী লঞ্চের যাত্রা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর হস্তক্ষেপে যান চলাচল স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। এ ঘোষণার পরপরই লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এরআগে সোহাগ হাওলাদার নামের ওই শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে শ্রমিকরা। একই সঙ্গে সড়ক অবরোধ করে তারা। পরে রাত ১০টার দিকে মামলা নেওয়া হলে থানা ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলেও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে বরিশাল থেকে সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে বিসিকের শিল্প কারখানার শ্রমিকরা সোহাগ হাওলাদারকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে। এক নারী শ্রমিককে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদে ওই যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দের কথা জানিয়েছেন ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। মারধরের শিকার সোহাগ হাওলাদার আওয়ামী লীগ কর্মী হওয়ায় কাউনিয়া থানা ঘেরাও করে তার দলের কর্মীরা।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে জানান, নগরীর বিসিক রোডের একটি ফ্যাক্টরির লোকজন পরিবহন শ্রমিক সোহাগ হাওলাদারকে দুপুর ২টার দিকে আটকে মারধর করে। একপর্যায়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। খবর পেয়ে শ্রমিকরা থানা ঘেরাও করলে পুলিশ সোহাগকে ছেড়ে দেয়। তবে ওই শ্রমিককে মারধরের প্রতিবাদে মারধরকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়েরের আবেদন দেয়া হলে পুলিশ মামলা নিতে চায়নি বলে দাবি করা হয়। মামলা নেওয়ার দাবিতে থানা ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ করা হয়।
তিনি আরো জানান, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সিটি মেয়রের নির্দেশে আমরা বাস চলাচল স্বাভাবিক করেছি। এছাড়া বাস শ্রমিককে মারধরকারীকে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
বরিশাল নৌ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা করা যাত্রীরা আটকা পড়েন বাস টার্মিনালেই। সড়কের দুই পাশে তৈরি হয় গাড়ির দীর্ঘলাইন। অপরদিকে নির্ধারিত সময় গন্তব্যের উদ্দেশ্যে লঞ্চ না ছাড়ায় রাত সাড়ে ১০টার পর যাত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। যাত্রা বিলম্ব হওয়ায় অনেক যাত্রী বাড়ি ফিরে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ আত্মগোপন করে।
ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান দাবি করেছেন, তার এক নারী কর্মীকে উত্ত্যক্ত করেছিল সোহাগ নামের এক যুবক। তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে তাকে মারধর করা হয়নি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ফরচুন গ্রুপের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানসহ তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।