
বাইক চালাতে রাস্তায় প্রথমে যে জিনিসটার দিকে লক্ষ্য রাখতে হয় সেটা হলো ব্রেক। আপনি যত ভালোই ড্রাইভ করুন না কেন, আপনার বাইকের ব্রেক ভালো না হলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে অনাকাঙ্খীত দুর্ঘটনা।
বর্ষাকালে মোটরসাইকেলের চাকা ভিজে গেলে ব্রেক কষতে হয় বুঝে-শুনে। তবে এদেশের রাস্তায় ব্রেক-ই যেন যানবাহনের প্রধান জিনিস। কখনও গরু, কুকুর আচমকা চলে আসে চলন্ত মোটরসাইকেলের সামনে। কখনও বেপরোয়া গাড়ি বিপদে ফেলে। কখনও আবার রাস্তায় পড়ে থাকে বালি, সুড়কি। ফলে ব্রেক সময়মতো কাজ না করলেই মহাবিপদ হতে পারে। এখন অবশ্য মোটরসাইকেলে ABS সিস্টেম থাকায় সুরক্ষা আগের থেকে কিছুটা সুনিশ্চিত হয়েছে। সরকার নতুন নিয়ম চালু করেছে, ১৫০ বা তার থেকে বেসি সিসির বাইকে এবিএস থাকতেই হবে।
এখনও সব মোটরসাইকেলে Anti-lock Braking System থাকে না। ফলে এবিএস বাদ দিলে মোটরসাইকেলে সাধারণত দুধরণের Brake দেখা যায়। Disc ও Drum Brake. এই দুই ধরণের ব্রেকের ফারাক বিস্তর। সুবিধা, অসুবিধাও রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক-
ড্রাম ব্রেকের থেকে ডিস্ক ব্রেক অনেক বেশি কার্যকরী। ডিস্ক থাকে হুইল-এর বাইরে। ফলে খোলা হাওয়ায় তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা হতে পারে। আর তাই প্রয়োজনের সময় ডিস্ক ব্রেক অনেক বেশি কার্যকরী হয়। অন্যদিকে, ড্রাম ব্রেক থাকে হুইলের ভিতরে। তাই সহজে ঠাণ্ডা হয় না। ফলে অনেক সময়ই ড্রাম ব্রেক সময়মতো কাজ করে না। তবে ড্রাম ব্রেক তুলনায় অনেক বেশি মজবুত হয়। কারণ এতে কোটিং করা থাকে। ফলে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।
ড্রাম ব্রেকের রক্ষণাবেক্ষণে খরচ কিন্তু বেশি। কারণ এটি হুইলের ভিতর দিকে থাকে। একবার বিগড়ে গেলে সহজে ড্রাম ব্রেক মেরামত করা যায় না। ছোটখাটো গোলমাল দেখা দিলেও ড্রাম ব্রেক সারাতে মেকানিকের কাছে নিয়ে যেতে হয়। ডিস্ক ব্রেক তুলনায় দামি। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণে বেশি ঝামেলা নেই। হুইলের বাইরের দিকে থাকায় এই ব্রেক মেরামত করাটাও সহজ।
ভিজে রাস্তায় ড্রামের থেকে ডিস্ক ব্রেক অনেক বেশি কার্যকর। যদিও মোটরসাইকেলের গতি বেশি হলে কখনওই ডিস্ক ব্রেক প্রয়োগ করা উচিত নয়। সেক্ষেত্রে চাকা পিছলে বিপদ হতে পারে। তবে চাকা ভেজা থাকলে ড্রাম ব্রেক কার্যকর নাও হতে পারে। কারণ সেক্ষেত্রে ব্রেক থ্রু ও লাইনিং-এর মাঝে গ্রিপ ঠিকভাবে নাও হতে পারে। ফলে যে কোনও পরিস্থিতিতেই ডিস্ক ব্রেকের সঠিকভাবে কাজ করার সম্ভাবনা বেশি। তবে ডিস্ক ব্রেক ব্যবহারে বাড়তি সতর্ক থাকতে হয়। না হলে চাকা পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।